সীতাকুণ্ডে গরুর খামারে ডাকাতি: এক রাতে ১২টি গরু লুট

  প্রিন্ট করুন   প্রকাশকালঃ ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৩:৪২ অপরাহ্ণ   |   ৩৯ বার পঠিত
সীতাকুণ্ডে গরুর খামারে ডাকাতি: এক রাতে ১২টি গরু লুট

সীতাকুণ্ড প্রতিনিধি:

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে একটি গরুর খামারে সশস্ত্র ডাকাতির ঘটনায় এক রাতেই ১২টি গরু লুট করে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। তবে একটি গরু পালিয়ে যাওয়ায় সেটি ডাকাতদের কবল থেকে রক্ষা পায়। সোমবার (রাত) মধ্যম বাঁশবাড়িয়া এলাকার বাঁশবাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন এন আই ডেইরি ফার্মে এ ঘটনা ঘটে।

খামারের মালিক ইসমাইল জানান, সোমবার রাত আনুমানিক আড়াইটার দিকে ১৮ থেকে ২০ জনের একটি সশস্ত্র ডাকাত দল টিনের বেড়া কেটে খামারে প্রবেশ করে। তারা অস্ত্রের মুখে তাকে জিম্মি করে হাত-পা বেঁধে মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়। চিৎকার করলে জবাই করার হুমকিও দেওয়া হয়।

এ সময় ডাকাত দলের অন্য সদস্যরা খামারে বাঁধা গরুগুলোর রশি কেটে ট্রাকে তুলে নেয়। একটি গরু দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ায় সেটি নিতে পারেনি ডাকাতরা। ডাকাতির সময় খামারের পাশের এক চা-দোকানদার ঘটনাস্থলে আসলে তাকেও ধরে জিম্মি করা হয়। একপর্যায়ে তার হাত-পা বেঁধে পাশের পুকুরে ফেলে দেওয়া হয়। পরে তিনি কোনোরকমে পুকুর থেকে উঠে প্রাণে বাঁচেন।

ডাকাতরা চলে যাওয়ার পর ৯৯৯ নম্বরে ফোন করা হলে প্রায় ২০ মিনিটের মধ্যে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে। পরে বিভিন্ন সড়কে তল্লাশি চালানো হলেও ডাকাতদের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।

খামারের অপর মালিক নজরুল ইসলাম বলেন, “জমি বিক্রি ও ব্যাংক ঋণ নিয়ে আমরা এই খামারটি গড়ে তুলেছিলাম। লুট হওয়া ১২টি গরুর মধ্যে পাঁচটি উন্নত জাতের গাভী ছিল, যেগুলো থেকে প্রতিদিন প্রায় ৫০ লিটার দুধ পাওয়া যেত। দুধ বিক্রির আয় দিয়েই সংসার ও খামারের খরচ চলত। এই ঘটনায় প্রায় ২২ থেকে ২৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। এখন আমরা নিঃস্ব হয়ে পড়েছি, ব্যাংক ঋণ পরিশোধ করব কীভাবে বুঝতে পারছি না।”

এ ঘটনায় সীতাকুণ্ড মডেল থানায় ১৮-২০ জন অজ্ঞাতনামা আসামির বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

সীতাকুণ্ড মডেল থানার ওসি (তদন্ত) মো. আলমগীর জানান, খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মহাসড়কসহ বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি চালিয়েছে। গরু উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

উল্লেখ্য, চলতি ডিসেম্বর মাসের ১৯ তারিখে ভাটিয়ারী এলাকায় মহাসড়ক থেকে ডাকাত দল একটি ট্রাকসহ ২৮টি গরু ছিনতাই করে। পরে পুলিশ ও জনতার সহায়তায় বাড়বকুণ্ড চৌধুরীপাড়া এলাকা থেকে বিভিন্ন স্থান হতে ক্রমান্বয়ে সবগুলো গরুই উদ্ধার করা হয়। পরপর এ ধরনের ঘটনায় এলাকায় গরু খামারিদের মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে।